তায়াম্মুমের নিয়্যত, তায়াম্মুম করার নিয়ম, তায়াম্মুম করার কারণসমূহ

তায়াম্মুমের নিয়্যত, তায়াম্মুম করার নিয়ম, তায়াম্মুম করার কারণসমূহ


তায়াম্মুম করার নিয়ম, গাড়িতে তায়াম্মুমের নিয়ম, তায়াম্মুমের ৩ ফরজ, মাটি ছাড়া তায়াম্মুমের নিয়ম, দেয়ালে তায়াম্মুমের নিয়ম, তায়াম্মুম করার নিয়ম, ফরজ গোসলের পরিবর্তে তায়াম্মুম এর নিয়ম, তায়াম্মুমের নিয়ত, তায়াম্মুমের নিয়ম ও ফরজ গুলো লেখ, তায়াম্মুম করার নিয়ম, তায়াম্মুম ওযু করার নিয়ম, তায়াম্মুম গোসল করার নিয়ম,

তায়াম্মুমের বিবরণ

শরী'য়ত সমর্থিত কারণ ছাড়া পানি ব্যবহারে অপারগতার কারণে পবিত্র মাটি ও ধূলা-বালি দিয়ে বিধিসম্মতভাবে পবিত্রতা অর্জন করাকে ইসলামী শরী'য়তের পরিভাষায় "তায়াম্মুম” বলে।

মহান আল্লাহ্ তা'আলা স্বীয় বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত দয়াপরবশ। তাই তিনি বান্দাদের শক্তির বাইরে কোন আদেশ দেন না। সুতরাং উল্লিখিত কারণে যদি কেউ অযূ-গোসল করতে অসমর্থ হয় তাদের জন্য মহান আল্লাহ্ তায়াম্মুমের বিধান রখেছেন। এ বিধানের উদ্ধৃতি দিয়ে মহান আল্লাহ্ তা'আলা ঘোষণা করেন- "পানির অভাবে তোমরা পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও।" (সূরা নিসা, আয়াত ৪৩)

এ ব্যাপারে রাসূলে আকরাম (সাঃ) এক বাণীতে উল্লেখ করেন- "যতক্ষণ র্যন্ত কোন পানির ব্যবস্থা না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত উক্ত মুসলমানের জন্য তায়াম্মুম থষ্ট হবে।"

প্রকাশ থাকে যে, পানির সাহায্যে যেভাবে পবিত্রতা লাভ করা হয় তায়াম্মুমের ধ্যমেও অনুরূপ পবিত্রতা লাভ করা যায় এবং নামায, রোযা ও অন্যান্য বাদাত-বন্দেগী, তিলাওয়াতে সিজদাহ্ ইত্যাদি কার্যসমূহ সম্পাদন করাতে দহের কোন অবকাশ নেই। tayammum niyom.

তায়াম্মুম করার কারণসমূহ

যেসব কারণে পানির পরিবর্তে (পাক মাটি, ধূলা দিয়ে) তায়াম্মুম করা সঙ্গত সেগুলো নিম্নরূপ: (ক) নিকটে অথবা দূরে কোথাও একেবারে পানি পাওয়া না গেলে। (খ) পানির খোঁজ করতে বের হলে নামাযের সময় চলে যাবার আশংকা থাকলে (গ) অযু করতে গেলে দু'ঈদের কিংবা জানাযার নামাযের জামা'আত হারানোর সম্ভাবনা থাকলে (ঘ) পানি কিনতে হলে যদি ক্রয় করার মত ক্ষমতা না থাকে।

(ঙ) পানি ব্যবহার করতে গিয়ে শত্রু কর্তৃক আক্রান্ত কিংবা হিংস্র জন্তুর দ্বারা আক্রান্ত হবার ভয় থাকলে। (চ) পানি ব্যবহার করার কারণে রোগ বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকলে। (ছ) অযু-গোসলের কাজ করলে খাবারের পানির অভাবের সম্ভাবনা থাকলে।

(৮) কুয়া হতে পানি উঠানোর মত কোনরূপ ব্যবস্থা না থাকলে। (জ) মহিলাদের হায়েয-নিফাসের পর পানি ব্যবহার করতে অক্ষম হলে গরম পানি দিয়ে চেষ্টা করবে, এতেও সম্ভব না হলে পরে তায়াম্মুম করা যাবে।

নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলেই অযু-গোসল করতে অক্ষম হলে, তায়াম্মুমের দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করে শরী'য়ত সম্মত সকল 'ইবাদাত-বন্দেগী করতে পারবে। উল্লেখ্য, অযু এবং গোসলের তায়াম্মুম একই রকমে করা যায়, এতে কোন প্রভেদ নেই।

তায়াম্মুমের ফরযসমূহ

তায়াম্মুমের তিনটি কাজ ফরয। যথা: ১। নিয়্যত করা, ২। সমস্ত মুখমণ্ডল মাসেহ করা এবং ৩। উভয় হাতের কনুই পর্যন্ত মাসেহ করা। প্রকাশ থাকে যে, এসব কাজসমূহ একবার করতে হয়। নিম্নে পৃথকভাবে এসবের নিয়ম উল্লেখ করা হল।

তায়াম্মুমের সুন্নতসমূহ

তায়াম্মুম করার সময়ে নিম্নলিখিত কাজগুলো করাও সুন্নত। যথাঃ (১) বিসমিল্লাহ্ পড়ে তায়াম্মুম আরম্ভ করা। (২) ধারাবাহিকভাবে তায়াম্মুম করা। (৩) মাটিতে হাত রেখে সামনে এবং পেছনের দিকে একটু টেনে আনা।

(৪) মাটিতে হাত লাগানোর সময় আঙ্গুলসমূহ একটু ফাঁকা রাখা। (ঙ) মাটি হতে হাত উঠায়ে উভয় হাতের পিঠে পিঠে একটু হালকাভাবে বাড়ি দিয়ে ঝেড়ে ফেলা। (চ) তায়াম্মুমের অঙ্গসমূহ একটু তাড়াতাড়ি মাসেহ করা।

তায়াম্মুম অজু করার নিয়ম, ফরজ গোসলের পরিবর্তে তায়াম্মুম করার নিয়ম, তায়াম্মুম করার নিয়ম, তাইমুম করার নিয়ম, তায়াম্মুমের নিয়ম কি, তায়াম্মুম নিয়ম, তায়াম্মুমের সুন্নতসমূহ, তায়াম্মুমের ফরযসমূহ, তায়াম্মুমের বিবরণ, যেসব কারণে তায়াম্মুম ভঙ্গ হয়, tayammum kivabe kore, tayammum niyom, তায়াম্মুমের নিয়্যত, তায়াম্মুম করার নিয়ম, তায়াম্মুম করার কারণসমূহ,

তায়াম্মুমের নিয়্যত

نويتُ أَنْ أَتَيمم لرفع الْحَدَثِ وَاسْتِبَاحَةَ لِلضَّلُوةِ وَتَقَرَّبَا إِلَى اللهِ تَعَالي

উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন আতাইয়াম্মামা লিরাফ'য়িল হাদাছি ওয়াস্তিবা হাতাল লিচ্ছালাতি ওয়া তাক্বাররুবান ইলাল্লাহি তা'আলা।

অর্থ: নাপাকী দূর করে শুদ্ধভাবে নামায আদায়ের নিমিত্তে মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভ করার উদ্দেশ্যে তায়াম্মুম করার মনস্থ করছি।

তায়াম্মুম করার নিয়ম

উভয় হাতের আঙ্গুলসমূহ ফাঁক করে তালু দ্বারা পাক-পবিত্র ধূলা-বালি মিশ্রিত স্থানে চাপড় মারবে, যাতে আঙ্গুলের ফাঁকেও ধূলা-বালি প্রবেশ করে। এরপর উভয় হাত উঠিয়ে পিঠে পিঠে একটু হালকাভাবে ঝাড়া দিয়ে সমস্ত মুখমণ্ডলের উপর মুছবে। হাতের আঙ্গুলে আংটি থাকলে তা অবশ্যই খুলে ফেলতে হবে।

রপর দ্বিতীয়বার উত্তমরূপে মাটিতে চাপড় মারবে, এরপর হাত উঠিয়ে পূর্বের মত ঝেড়ে নিয়ে প্রথমে বাম হাতের তালু ও বৃদ্ধাঙ্গুলি ব্যতীত অন্যান্য আঙ্গুলসমূহের পেট দ্বারা ডান হাতের আঙ্গুলের পিঠের মাথা হতে শুরু করে কনুই পর্যন্ত নিচ দিয়ে মুছে আনবে।

এরপর কনুই হতে আরম্ভ করে উপরের দিক দিয়ে বাম হাতের তালু এবং বৃদ্ধাঙ্গুলির তালু দিয়ে চেপে ধরে সামনের দিকে আঙ্গুলের মাথা পর্যন্ত আনবে। অনুরূপভাবে ডান হাত দ্বারা বাম হাতের মাসেহ কার্য সম্পাদন করবে।

এরপর যদি আঙ্গুলের ফাঁকের জন্য সন্দেহ থাকে তাহলে উভয় হাতের আঙ্গুলের ফাঁকসমূহ মুছে নিবে। এভাবে তায়াম্মুমের কাজ সমাধা করে ঐ ওয়াক্তের নামাযে যত 'ইবাদাত ইচ্ছা করতে পারবে। কিন্তু পরের ওয়াক্ত নামায আদায়ের জন্য আবার নতুন করে অযূ করতে হবে।

যেসব কারণে তায়াম্মুম ভঙ্গ হয়

নিম্নে তায়াম্মুম ভঙ্গ হওয়ার কারণসমূহ আলোচনা করা হল:
(ক) যেসব কারণে অযু ভঙ্গ হয়, সেসব কারণে তায়াম্মুমও ভঙ্গ হয়। (খ) পানির অভাবে তায়াম্মুম করার পর পানি পাওয়া গেলে তখন তায়াম্মুম ভঙ্গ হয়ে যাবে এবং পানি দ্বারা অযু করে নিতে হবে। (গ) যেসব কারণে তায়াম্মুম করা বৈধ ছিল সেসব কারণসমূহ দূর হয়ে গেলে তায়াম্মুম ভঙ্গ হয়ে যাবে।

Post a Comment

0 Comments