কাজা নামাজ, কাজা নামাজের নিয়ম, নিয়ত বাংলায় ও আরবিতে, কাযা নামায আদায়ের নিয়ম
কোন কারণ বশতঃ নামাযের ওয়াক্ত ফওত হইলে উক্ত নামায অন্য সময় পড়াকে ক্বাজা নামায বলে। যদি কাহারও একের অধিক অর্থাৎ পাঁচ ওয়াক্তের নামায ক্বাজা হয়, তাহা উপস্থিত নামাযের পূর্বেই আদায় করিয়া লইবে। বেতরের নামাযের ক্বাজা ফজরের নামায পড়িবার আগে আদায় করিতে হইবে।
কাজা নামাজ আদায়ের নিয়ম
যদি ক্বাজা হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয় তাহা হইলে আগে ওয়াক্তের নামায আদায় করিবে। ক্বাজা নামায আদায় করিতে গেলে যদি জামায়াত না পাওয়া যায় এইরূপ হইলে জামায়াতে ফরজ আগে পড়িয়া পরে কক্বাজা পড়িবে।
ফরজ ও বেতেরের ক্বাজা আদায় করিতেই হইবে। কেননা ফরজের ক্বাজা আদায় করা ফরজ এবং ওয়াজিবের ক্বাজা আদায় করাও ফরজ। সুন্নতের ক্বাজা আদায় করিলে তাহাতে নফলের সওয়াব পাইবে।
ফজরের নামাষ ক্বাজা হইলে তাহার সুন্নত সহ দ্বিপ্রহরের পূর্বে আদায় করিবে। ঈদের নামায ওয়াজিব ইহলেও তাহার ক্বাজা আদায় করিতে হয় না।
যদি পাঁচ ওয়াক্তের বেশী নামায জমা থাকে এবং তাহা আদায় করিতে গেলে বর্তমান নামাষ - ক্বাজা হয় তাহা হইলে শেষ ওয়াক্তের ক্বাজা পড়িয়া বর্তমান নামায আদায় করিবে, পরে বাকী ক্বাজা নামায পড়িবে। গাফলতির জন্য নামায ক্বাজা করিলে আল্লাহ্ মাফ করিবেন না।
ওমরী কাযা নামায
রাসূলে করীম (সাঃ) বলেছেন, যদি কোন লোকের দীর্ঘ দিনের নামায কাযা হয়ে থাকে এবং সে তার সংখ্যা না জানে, তবে সে জুময়ার দিন ফরয নামায অর্থাৎ জুময়ার নামাযের পূর্বে চার রাকাত নফল নামায এক সালামে আদায় করবে।
এ নামাযের প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতিহার পরে আয়াতুল কুরছী সাতবার এবং সূরা কাওছার পনেরবার পড়বে। এ নামায পড়লে নামাযী ও তার মাতা-পিতার অসংখ্য কাযা নামায আল্লাহ্ পাক দয়া করে মাফ করে দিবেন।
نَوَيْتُ أَنْ أُصَلَّى لِلَّهِ تَعَالَى أَرْبَعَ رَكَعَاتِ تَكْفِيرًا لِلْقَضَاء فَاتَتْ مِنِّي عَلَى عُمْرِي صَلوةِ النَّقْلِ مُتَوَجِهَا
إِلى جِهَةِ الكَعْبَةِ الشَّرِيفَةِ اللَّهُ أَكْبَرُ .
উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন্ উছোয়াল্লিয়া লিল্লা-হি তা'আ-লা-আরবা'আ রাক্'আতে তাকফীরাললীল্ ক্বাদায়ে ফা-তাত্ মিন্নী'আলা উমরী ছলা-তিন্ নাফলি মুতাওয়াজ্জিহান ইলা-জিহাতিল্ কা'বাতিশ্ শারীফাতি আল্লা-হু আকবার।
এ নামায সম্পর্কে 'ফয়জুল মোবতাদী' ও 'রুকনে দীন' গ্রন্থে বর্ণিত আছে। ওমরী কাযা নামাযে 'ফয়জুল মোবতাদী' কিতাবে আয়াতুল কুরছী ৭ বার এবং 'রুকনে দীন কিতাবে ১ বার পড়ার কথা উল্লেখ আছে।
কাযা নামাযের নিয়ত
ক্বাজা নামাযের নিয়তে নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি-এর স্থলে নাওয়াইতু আন আকজিয়া লিল্লাহি বলিতে হইবে এবং ওয়াক্তের নামের পরে আলফাইতাতু বলিতে হইবে। (যেমন-জোহরের ক্বাজা নামাযের নিয়ত)
نَوَيْتُ أَنْ أَقْضِيَ لِلَّهِ تَعَالَى أَرْبَعَ رَكَعَاتِ صَلوةِ الظَّهْرِ الْفَائِنَةِ فَرْضُ اللَّهِ تَعَالَى مُتَوَجِهَا إِلَى جِهَةِ الكَعْبَةِ الشَّرِيفَةِ اللَّهُ أَكْبَرُ .
উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন আকজিয়া লিল্লাহি তাআলা আরবায়া রাকয়াতি ছালাতিজ্জুহরিল ফাইতাতি ফারজুল্লাহি তাআলা মুতাওয়াজ্জিহান, ইলা জিতাহিল কা'বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।
সুতরার বিবরণ
নামাযের সময়ে সামনে দিয়া চলাফেরা করা কঠিন গুনাহ্। কাজেই নামায পড়ার সময় যদি সামনে কোন আড় বা বেড়া না থাকে এমন জায়গায় নামায পড়িলে সামনে কমপক্ষে এক আঙুল পরিমাণে মোটা এবং এক হাত সমান লম্বা একটি কাঠি পুঁতিয়া নামায পড়িবে।
ইহাকেই সুতরা বলে। জামায়াতের সাথে নামায পড়িলে শুধু ইমামের সামনে সুতরা থাকিলেই চলিবে, গোটা জামায়াতের সকলের সামনে সুতরা থাকার আবশ্যকতা নেই।

0 Comments