সাহু সিজদার নিয়ম, নামাজে সাহু সেজদা কীভাবে দিবেন? সাহু সিজদা করার সঠিক নিয়ম

সাহু সিজদার নিয়ম, নামাজে সাহু সেজদা কীভাবে দিবেন? সাহু সিজদা করার সঠিক নিয়ম

সাহু সিজদার নিয়ম কি, সাহু সিজদা করার নিয়ম, সাহু সিজদা করার সঠিক নিয়ম কী?, নামাজে সাহু সিজদায় ভুল হলে কী করণীয়?, সিজদার সঠিক পদ্ধতি কী?, নামাজের মধ্যে ভুল হলে কী করণীয়?, sahu sijdar niyom, সাহু সিজদার আদায়ের নিয়ম কি, সাহু সিজদার আদায়ের নিয়ম আব্দুর রাজ্জাক, সাহু সিজদার আদায়ের নিয়ম জাকির নায়েক, সাহু সিজদার সঠিক পদ্ধতি কী?, সাহু সিজদার নিয়ম, নামাজে সাহু সেজদা কীভাবে দিবেন? সাহু সিজদা করার সঠিক নিয়ম,

সাহু সিজদার বিবরণ

নামাযের ভিতরে ভুল বশতঃ কোন ওয়াজিব তরক হইলে শেষ বৈঠকে তাশাহুদের পর ডান দিকে সালাম ফিরাইয়া পরে দুইটি সিজদাহ করা ওয়াজিব। ইহাকে সিজদায়ে সোহ বা ছাহ সিজদাহ বলে। ছোহ সিজদাহ দেওয়ার পর পুনঃ তাশাহুদ, দরূদদোয়া মাছুরা পড়িয়া সালাম ফিরাইয়া নামায শেষ করিবে।

ইমামের ভুলের জন্য মোক্তাদিকেও ছোহ সিজদাহ করিতে হইবে। কিন্তু মোক্তাদির ভুলের জন্য কাহাকেও ছোহ সিজদাহ করিতে হইবে না।

নিম্নলিখিত কারণসমূহে ছোহ সিজদাহ করিতে হয়-

(১) ফরজ রোকনগুলি ঠিকমত আদায় না করিলে।
(২) কোন ফরজ রোকন অতিরিক্ত করিলে।
(৩) কোন ফরজ আদায়ে দেরী করিলে কিংবা অতিরিক্ত পড়িলে।
(৪) কোন ওয়াজিব ছাড়িয়া দিলে।
(৫) ইমাম শব্দ করিয়া সূরা পড়ার জায়গায় চুপ করিয়া পড়িলে।
(৬) যে যে স্থানে সূরা চুপে চুপে পড়িতে হয় সেই জায়গায় শব্দ করিয়া পড়িলে।
(৭) এক ওয়াজিবের জায়গায় অন্য ওয়াজিব আদায় করিলে।

যাহার উপর সিজদায়ে ছোহ লাজেম সে যদি ভুলে সিজদাহ না করিয়া সালাম ফিরায় পরে মনে হওয়ায় সিজদায়ে ছোহ করে তবে সিজদায়ে ছোহর পূর্বে তাহার নামায শেষ হয় নাই।

একই নামাযে একের বেশী ভুল করিলে এক সিজদাহতেই হয়। একবার সিজদায়ে ছোহ করিবার পর আবার ভুল করিলে পুনরায় সিজদায় ছোহ করিতে হইবে।

যে সব কারণে সাহু সিজদাহ ওয়াজিব হয়

লিম্নলিখিত কারণে সাহু সিজদা ওয়াযিব হয়ঃ

১। সূরা ফাতিহা তরক করিলে বা কিরাত আগে পড়িলে।
২। কোন ফরয কাজ বারবার করিলে।
৩। ভুলবশত: ফরয কাজ আগ পাছ করিলে।
৪। এক ওয়াযিবের স্থলে অন্য ওয়াযিব পালন করিলে।
৫। তাশাহুদ তরক করিলে।
৬। জোরে কিরাত পড়ার স্থলে চুপে কিরাত পড়িলে।
৭। চুপে পড়ার স্থলে জোরে পড়িলে।

নামাজে ‘সিজদায়ে সাহু’ দেওয়ার নিয়ম

‘সিজদাহে সাহু’ অর্থ ভুলে সিজদা করা। যদি আপনি ভুল করে নামাজের কোন ফরজ কাজ ভুলে যান, তাহলে আপনাকে সিজদাহে সাহু করতে হবে। তারপর সিজদাহে সাহু করা ফরজ। সিজদাহে সাহুর মাধ্যমে নামাজ সম্পন্ন হয়। সিজদাহে সাহু কখন, কেন এবং কীভাবে আদায় করতে হবে তার সংক্ষিপ্ত নিয়ম।

♦ যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে কোন ফরজ কাজ বাদ দেয়, তাহলে তা গুনাহগার হবে। নামাজও বাতিল হবে।

তা আবার আদায় করতে হবে। তাহলে সিজদাহে সাহুর মাধ্যমে নামাজ সম্পূর্ণ হবে না।

♦ যদি আপনি ভুল করে নামাজের কোন ফরজ কাজ বাদ দেন, তাহলে সিজদাহে সাহু ফরজ। (বুখারী, হাদিস: ৩৮৬, আবু দাউদ, হাদিস: ৮৭৪, আল-মুজামুল আওসাত: ৭৮০৮)

♦ যদি কেউ ফরজের প্রথম দুই রাকাতে অথবা যেকোনো এক রাকাতে সূরা ফাতিহা পাঠ করে, অথবা নফল ও বিতরের যেকোনো রাকাতে ভুলবশত সূরা ফাতিহা পাঠ বাদ পড়ে যায়, তাহলে সাজদায় পড়তে ভুলে যাওয়া ফরজ হয়ে যায়। (মুসলিম, হাদিস: ৮৯৩)

♦ যদি কেউ ফরজের প্রথম দুই রাকাতে পড়তে ভুলে যায়, তাহলে তার উচিত শেষ দুই রাকাতে তা পাঠ করা। তবে সাজদায় পড়তে ভুলে যাওয়া ওয়াজিব। (মুসলিম: ৮৯৫, মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা: ১/৪০৯)

♦ যদি কেউ ফরজের দুই রাকাতে অথবা যেকোনো এক রাকাতে পড়তে ভুলে যায়, তাহলে সাজদায় পড়তে ভুলে যাওয়া ফরজ। (আন-নাসাঈ: ১২৪৩)

♦ যদি কেউ এক সিজদা করার পর পরবর্তী রাকাতের জন্য দাঁড়ায়, তাহলে তাকে অবশ্যই দুটি সিজদা দিয়ে সেই রাকাতটি সম্পূর্ণ করতে হবে এবং তারপর যে সিজদাটি সে মিস করেছে তা করতে হবে। অবশেষে, তাকে অবশ্যই ভুলে যাওয়ার সিজদা করতে হবে, তাহলে নামায সম্পূর্ণ হবে। (পূর্ববর্তী)

♦ যদি কেউ তিন বা চার রাকাত নামাযের শুরুতে বসতে ভুলে যায়, তা ফরজ নামায হোক বা নফল, তাহলে তাকে ভুলে যাওয়ার সিজদা করতে হবে। (আবু দাউদ, হাদিস: ৮৮২)

♦ যদি কেউ তাশাহহুদ পড়তে ভুলে যায়, তাহলে তাকে ভুলে যাওয়ার সিজদা করতে হবে। (আন-নাসাঈ, হাদিস: ১২৪৩)

♦ যদি কেউ বিতর নামাযের তৃতীয় রাকাতে রুকু করার আগে কুনূত পড়তে ভুলে যায়, তাহলে তাকে ভুলে যাওয়ার সিজদা করতে হবে। (বায়হাকী, হাদিস: ৪০৪২,)

♦ যদি কেউ প্রথম বৈঠকে তাশাহহুদের সাথে দুরূদ ইত্যাদি পাঠ করে, তাহলে তাকে ভুলে গিয়ে সিজদা করতে হবে। (মুসলিম, হাদিস: ৮৯৫)

সিজদা করতে ভুলে যাওয়ার পদ্ধতি

যে ব্যক্তি সিজদা করতে ভুলে যায়, তার উচিত শেষ বৈঠকে তাশাহহুদ পড়া এবং ডান দিকে সালাম ফেরানো। তারপর তাকবীর বলে নামাজের মতো দুটি সিজদা করে তাশাহহুদ, দুরূদ এবং দুআ-এ-মাসুরা পড়ে সালাম ফেরানো। সালামের আগে সিজদা করলে তোমার সালাত পূর্ণ হবে। তবে তা মাকরুহ এবং তানজিহি। (মুসনাদে আহমাদ: ১৮১৮৮, বুখারী, হাদিস: ১১৫০, ১১৫৩, তিরমিযী, হাদিস: ৩৬১)

Post a Comment

0 Comments