কালিমা সমূহ, কালিমা সমূহের বিবরণ, পাঁচ কালেমা বাংলা উচ্চারণ অর্থসহ

কালিমাসমূহের বিবরণ, কালিমা সমূহ, পাঁচ কালেমা আরবি, কালেমা তাইয়্যেবা আরবি, কালিমা শাহাদাত, পাঁচ কালিমা সমূহ, কালিমা তায়্যিবা বাংলা, কালিমা তাওহীদ ও তামজীদ, কালিমা আরবি, কালেমা তাইয়্যেবা ছবি, কালিমা সমূহ, কালিমা সবগুলো, কালিমায়ে তাইয়্যেবাহ্ বাংলা উচ্চারণ, কালিমায়ে শাহাদাত বাংলা উচ্চারণ, কালিমায়ে তাওহীদ বাংলা উচ্চারণ, কালিমায়ে তামজীদ বাংলা উচ্চারণ,

কালিমা সমূহ, কালিমা সমূহের বিবরণ, পাঁচ কালেমা বাংলা উচ্ছারণ অর্থসহ

কালিমায়ে তাইয়্যেবাহ্ (পবিত্র বাক্য)

لا إله إِلَّا اللهُ مُحَمَّدٌ رَّسُولُ اللَّهِ .

উচ্চারণ: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহি।

অর্থ: মহান আল্লাহ্ তা'আলা ছাড়া অন্য কোন ইলাহ (উপাস্য) নেই। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) মহান আল্লাহর প্রেরিত রাসূল।

কালিমায়ে শাহাদাত (সাক্ষ্য বাক্য)

أَشْهَدُ أَنْ لا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لا شَرِيكَ لَهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عبْدَهُ وَرَسُولُهُ .

উচ্চারণ: আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকালাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান 'আবদুহু ওয়া রাসূলুহু।

অর্থ: আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, একমাত্র মহান আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই। তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই এবং আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয়ই হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহান আল্লাহ্ তা'আলার প্রেরিত রাসূল।

কালিমায়ে তাওহীদ (একত্ববাদ বাক্য)

لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ وَاحِدً الَّا نَانِي لَكَ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ إِمَامُ الْمُتَّقِينَ رَسُولُ رَبِّ الْعَلَمِينَ .

উচ্চারণ: লা ইলাহা ইল্লা আন্তা ওয়াহিদাল্লা ছানিয়া লাকা মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহি ইমামুল মুত্তাক্বীনা রাসূলু রাব্বিল 'আলামীনা।

অর্থঃ হে মহান আল্লাহ্! তুমি ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই। তুমি একক, তোমার দ্বিতীয় আর কেউ নেই। হযরত মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) মুত্তাকীদের অগ্রগামী (ইমাম) আর এ সমগ্র বিশ্ব প্রতিপালকের পক্ষ হতে প্রেরিত রাসূল।

কালিমায়ে তামজীদ (গুণবাক্য)

لا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ نُورًا يَهْدِي اللَّهُ لِنُورِهِ مَنْ يَشَاءُ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ إِمَامُ الْمُرْسَلِينَ خَاتَمُ النَّبِيِّينَ .

উচ্চারণ: লা ইলাহা ইল্লা আন্তা নূরাইঁ ইয়াহ্দিআল্লাহু লিনূরিহী মাইঁ ইয়াশাউ মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহি ইমামুল মুরসালীনা খাতামুন্ নাবিয়‍্যীনা।

অর্থ: হে আল্লাহ। একমাত্র তুমি ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই। স্বীয় নূরের দ্বারা যাকে ইচ্ছা তিনি হিদায়াত দান করে থাকেন। মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর প্রেরিত রাসূল এবং সমস্ত রাসূলগণের অগ্রগামী (ইমাম) সর্বশেষ নবী।

কালিমায়ে রদ্দে কুফর

(কুফরী হতে বিরত হবার বাক্য)

اللهم اني اعوذ بك من ان اشرك بك شيئا ونؤمن به واستغفرك ما اعلم به وما لا اعلم به واتوب وامنت  واقول ان لا اله الا الله محمد رسول الله

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নী আ'উযু বিকা মিন আন উশরিকা বিকা শাইয়াওঁ ওয়ানু'মিনু বিহী ওয়াসতাগফিরুকা মা আ'লামু বিহী ওয়ামা লা আ'লামু বিহী ওয়াআতূবু ওয়া আমানতু ওয়া আকুলু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহি।

অর্থঃ হে আল্লাহ্! নিশ্চয়ই আমি আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আপনার সাথে কোন কিছুকে শরীক করা এবং তার প্রতি বিশ্বাস করা হতে এবং আমার জানা এবং অজানা সকল গুনাহ হতে আপনার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি।

আর তাওবা করছি এবং আপনার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করলাম আর এ কথা স্বীকার করছি যে, নিশ্চয়ই একমাত্র মহান আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কেউ উপাস্য নেই এবং নবী মুহাম্মদ (সাঃ) মহান আল্লাহ্ তা'আলার প্রেরিত রাসূল।

কালিমার, কালিমা মুফাসসাল, কালিমা, কালিমা সূরা, কালিমা কি, kalima samuha, কালিমা সমূহ, Kālimā samūha, kalima-samuha, কালিমাসমূহের বিবরণ, পাঁচ কালেমা বাংলা উচ্ছারণ অর্থসহ, কালিমায়ে তাইয়্যেবাহ্ বাংলা উচ্চারণ অর্থসহ, কালিমায়ে শাহাদাত বাংলা উচ্চারণ অর্থসহ, কালিমায়ে তাওহীদ বাংলা উচ্চারণ অর্থসহ, কালিমায়ে তামজীদ বাংলা উচ্চারণ অর্থসহ, কালিমায়ে রদ্দে কুফর, ত্বাহারাত বা পবিত্রতার বিবরণ, কালেমা বাংলা উচ্চারণ অর্থসহ,

ত্বাহারাত বা পবিত্রতার বিবরণ

কালিমা সমূহ, ত্বাহারাত বা পবিত্রতার প্রকারভেদ: ত্বাহারাত বা পবিত্রতা প্রধানত চার প্রকার। যথা: ১। তাহারাত প্রকাশ্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গমূহকে নাজাসাত ও অতিরিক্ত হতে পাক, হওয়া। ২। তাহারাত সর্ব শরীরকে গুনাহ্ হতে পাক করা। এ দু'প্রকার ত্বাহারাত অর্জন না করলে 'ইবাদাত সহীহ হবে না।

৩। ত্বাহারাত হল অন্তরকে অসৎ স্বভাব হতে পাক করা, এটা ব্যতীত 'ইবাদাত কবুল হবে না। সুতরাং প্রত্যেক মুসলমানেরই প্রকাশ্য ও গোপন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ত্বাহারাত অর্জন করার জন্য যাহেরী ও বাত্বেনী 'ইলম শিক্ষা করা ফরয। ৪। ত্বাহারাত সর্ব-সাধারণের জন্য নয়, তা নবী-রাসূলগণের জন্য খাছ।

উল্লেখ্য, প্রথম প্রকার ত্বাহারাতে বর্ণিত প্রকাশ্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গসমূহকে নাজাসাত ও অতিরিক্ত হতে পাক করার অর্থ হল পেশাব-পায়খানা বা ইত্যাদি জাতীয় নাজাসাতে গলীযা ও নাজাসাতে খফীফাহ হতে শরীরকে পাক করা। আর ফোজলাচীজ অর্থ হল শরীরের মধ্যে বাড়তি কতগুলো জিনিস রয়েছে যেগুলো দেখতে খারাপ দেখায়।

যেমন-মাথার চুল, হাত-পায়ের নখ, বগলের এবং নাভীর নিচের পশমসমূহকে যথানিয়মে কেটে পরিষ্কার করা। আর অন্তরকে অসৎ স্বভাব হতে পাক করার অর্থ হল, মানুষের মনের মধ্যে অসংখ্য অসৎ স্বভাব রয়েছে যা মৌলিকভাবে ১০ প্রকার।

উক্ত অসৎ স্বভাবসমূহের প্রকারভেদ জেনে তা'হতে মুক্ত হয়ে অন্তরকে অসৎ স্বভাবসমূহ হতে মুক্ত করা যায়, আর এ বিদ্যা শিক্ষা করা ফরয। এ ব্যাপারে বিখ্যাত ফতোয়ার কিতাব শামীতে উল্লেখ আছে (১ম খণ্ড ৪০ পৃঃ) 

মূলকথা হল--"অন্তরে কতকগুলো অসৎ স্বভাব রয়েছে উক্ত অসৎ স্বভাবসমূহ দূর করা ফরয। তবে অন্তরের এসব অসৎ স্বভাবসমূহ দূর করা কস্মিনকালেও সম্ভব হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত ঐ সকল অসৎ স্বভাবসমূহের পরিচয় বা সংজ্ঞা, উৎপত্তির কারণ, চিহ্নসমূহ এবং এগুলো দূর করার নিয়ম জানা না থাকে।" আর এসব সম্পর্কে প্রয়োজনীয় জ্ঞান অর্জন করা প্রত্যেকের জন্যই ফরয।

নাজাসাত ও তার প্রকারভেদ

নাজাসাত শব্দের অর্থ অপবিত্রতা বা নাপাকী। যেমন পবিত্র আর পাক এক কথা নয়, তদ্রূপ অপরিষ্কার ও অপবিত্র এক কথা নয়। যেমন অনেকেই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কাপড় পরিধান করে থাকে, কিন্তু পেশাব-পায়খানা করার পর ঢিলা-কুলুখ বা পানি কিছুই ব্যবহার করল না। এতে পেশাবের কিছু অংশ তার শরীরের পরিষ্কার কাপড়ে 'লেগে গেল। এ অবস্থায় তার কাপড় পরিষ্কার থাকা সত্ত্বেও তা পবিত্র রইল না। আবার অনেক লোকের পরনে ময়লা অপরিষ্কার কাপড় আছে, কিন্তু সে

পেশাব-পায়খানা করার পর সুন্দরভাবে ঢিলা-কুলুখ ও পানি ব্যবহার করল। এ অবস্থায় দেখা গেল, তার ময়লা-অপরিষ্কার কাপড়ও পবিত্র বলে গণ্য হয়। পাক-পবিত্রতা সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিতে হবে।

নাজাসাত  দু'প্রকার। যথাঃ ১। নাজাসাতে গলীযা, ২। নাজাসাতে খফীফাহ। নিম্নে এগুলোর পৃথক পৃথক আলোচনা করা হল।

১। নাজাসাতে গলীযা বা কঠিন নাপাকী: যে সকল বস্তুর নাপাকী ভারি ধরনের সেগুলোকে নাজাসাতে গলীযা বলে। যেমন-প্রবাহমান রক্ত, মেয়েলোকের হায়েয ও নিফাসের রক্ত, মানুষের মল-মূত্র; বীর্য, মনি, পেশাব-পায়খানা, কুকুরের শরীরের যাবতীয় অংশ, সর্বপ্রকার পশুপাখির মল-মূত্র নাপাক।

এ ধরনের নাজাসাতসমূহ মানুষের শরীরে বা কাপড়-চোপড়ে লাগলে দেখতে হবে ঐ নাপাকীটি তরল না ঘন। যদি তা তরল হয় তাহলে যে পরিমাণ তরল জিনিস হাতের তালুতে টিকে থাকে সে পরিমাণ বা তা হতে কম হয়, তাহলে ঐ পরিমাণ নাজাসাত নিয়ে নামায আদায় করা জায়েয হবে।

আর যদি উল্লিখিত পরিমাণ হতে বেশি হয়, তা হলে ঐ অবস্থায় কাপড়-চোপড় ও শরীরের অংগ ধৌত করে পাক না - করা পর্যন্ত তা নিয়ে নামায পড়লে নামায আদায় হবে না। আর যদি উক্ত নাপাকী বস্তুটি গাড় হয় তবে তা ওজনে এক সিকি পরিমাণ পর্যন্ত শিথিলতা আছে।

অর্থাৎ ঐ পরিমাণ নাজাসাত নিয়ে নামায আদায় করা জায়েয হবে। এক সিকির বেশি পরিমাণ ওজন হলে তা নিয়ে নামায আদায় করা জায়েয হবে না। বরং উক্ত কাপড় ও শরীরের অংশ ধুয়ে পবিত্র করে নিতে হবে।

উল্লেখ্য, বর্ণিত ওজন পরিমাণ নাজাসাতে গলীযাসহ নামায পড়া জায়েয হলেও 'বিনা কারণে পরিষ্কার না করে তা নিয়ে নামায আদায় করা মাকরূহ। আর যদি ভুলবশত বা অসাবধানে উক্ত পরিমাণের বেশি নাজাসাত নিয়ে নামায আদায় করা হয়, তাহলে পূর্ণরূপে পবিত্রতা অর্জন করে পুনরায় নামায আদায় করতে হবে।

কোন খাদ্যের ভেতর এ ধরনের নাজাসাত পড়ে গেলে তা পরিমাণে অল্প হলেও ঐ খাদ্যসমূহ খাওয়া জায়েয হবে না। যেমন-এক পাতিল দুধের মধ্যে সামান্য গরু ইত্যাদির চনা পড়লে সে খাদ্য খাওয়া জায়েয হবে না।

২। নাজাসাতে খফীফাহ বা হাল্কা নাপাকী: নাজাসাতে গলীযা ছাড়া আর যত রকমের নাপাক বস্তু আছে বাকি সবগুলোই "নাজাসাতে খফীফাহ্” বা হাল্কা নাপাকী। হালাল পশু যেগুলোর গোস্ত খাওয়া জায়েয সেসব পশুর মূত্র, গরু-ছাগলের প্রস্রাব-পায়খানা এবং পাখির পায়খানা এগুলো নাজাসাতে খফীফাহ।

এ ধরনের নাজাসাতে খফীফাহ শরীরে অথবা জামা-কাপড়ে লাগলে যে অংশে লেগেছে সে অংশের চার ভাগের এক ভাগ হতেও কম হলে মাফ। যে সকল কাপড়ের অংশ

নেই যেমন চাদর, পাগড়ী, পেটিকোট ইত্যাদি, এগুলোর পুরা কাপড়ের চারভাগের একভাগ চিহ্নিত করতে হবে। আর যদি শরীর বা জামা-কাপড়ের চারভাগের একভাগ কিংবা এর চেয়ে বেশি জায়গায় এ ধরনের নাজাসাত লাগে তাহলে তা নিয়ে নামায পড়লে নামায জায়েয হবে না।

Post a Comment

0 Comments