নামায ভঙ্গ হওয়ার কারণ সমূহ, নামাজ ভঙ্গের কারণগুলো কী কী? সালাত অবস্থায় কী কী কাজ করলে সালাত ভঙ্গ হয়ে যায়?

নামায ভঙ্গ হওয়ার কারণ কি, নামায ভঙ্গ হওয়ার কারণ সমূহ, নামাজ ভঙ্গের কারণগুলো কী কী? সালাত অবস্থায় কী কী কাজ করলে সালাত ভঙ্গ হয়ে যায়?, ওযু ভঙ্গের কারণ ১৯টি, নামাজ ভঙ্গের কারণ ১৯ টি কি কি, নামাজ ভঙ্গের কারণ ৭টি, মহিলাদের নামাজ ভঙ্গের কারণ, নামাজ ভঙ্গের কারণ দলিল সহ, নূরানী পদ্ধতিতে নামাজ ভঙ্গের কারণ, নামাজ ভঙ্গের কারণ আল কাউসার, নামাজ ভঙ্গের কারণ কয়টি, নামায ভঙ্গ হওয়ার কারণ সমূহ, নামাজ ভঙ্গের কারণ কয়টি ও কি কি, নামাজ ভঙ্গের কারণ দলিল সহ, নূরানী পদ্ধতিতে নামাজ ভঙ্গের কারণ, নামাজ ভঙ্গের কারণ আল কাউসার, নামাজ ভঙ্গের কারণ কয়টি, নামায সম্পর্কিত কিছু মাসয়ালা, নামাযের মাকরুহ সমূহ, নামাজের মাকরুহ কয়টি?, যেসব সময় নামাজ পড়া মাকরুহ, namaz bhanga hoyar karon samuha, oju vangar karon, namaz bhangar karo, namaz bhangar karoon, namaz bhangar karan, namaz banga karan,

নামায ভঙ্গ হওয়ার কারণ সমূহ, নামাজ ভঙ্গের কারণগুলো কী কী? সালাত অবস্থায় কী কী কাজ করলে সালাত ভঙ্গ হয়ে যায়

নামাযের মধ্যে যে সব কাজ করলে নামায ভঙ্গ হয়ে যায় এবং সে নামায পুনরায় আদায় করতে হয়, সেসব কারণসমূহ নিম্নে উল্লেখ করা হলঃ (১) নামাযরত থাকাবস্থায় ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় কথাবার্তা বলা। (২) ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় কোনরূপ পানাহার করা।

(৩) নামাযরত অবস্থায় কাউকে সালাম দেয়া এবং সালামের উত্তর দেয়া। (৪) দেখে দেখে কিরাআত পাঠ করা। (৫) নামাযের মধ্যে কোনরূপ আহ্-উহ্ শব্দ করা। (৬) কাশি না এলেও ইচ্ছাকৃতভাবে কাশি দেয়া। (৭) কোন কারণে উচ্চ আওয়াজে কান্নাকাটি করা

(৮) কোনরূপ শুভ সংবাদে আলহামদু লিল্লাহ, আর দুঃসংবাদে ইন্নালিল্লাহ্ পাঠ করা। (৯) কিবলা ব্যতীত অন্যদিকে মুখ করে নামায পড়া। (১০) নামাযের মধ্যে নিজ ইমাম ছাড়া অন্য লোকের কিরাআত পাঠে লোকমা দেয়া। (১১) অপবিত্র স্থানে সিজদাহ দেয়া। (১২) নামাযের কোন ফরয কাজ ছেড়ে দেয়া।

(১৩) সতরের এক-চতুর্থাংশ পরিমাণ কাপড় খুলে যাওয়া। (১৪) নামাযে 'আমলে কাসীর করা। (১৫) বিনা অযূতে নামায পড়া। (১৬) নামাযের মধ্যে অট্টহাসি হাসা। (১৭) নামাযরত অবস্থায় দুনিয়াবী বিষয়ের প্রার্থনা করা। 

(১৮) সিজদাহ করার সময় মাথা জমিনে রেখে পদদ্বয় জমিন হতে উঠিয়ে ফেলা। (১৯) নেশাগ্রস্ত হয়ে বেহুঁশ অবস্থায় নামায পড়া। (২০) নামাযের মধ্যে ছোট শিশুকে দূরে ঠেলে দিয়ে কিংবা কোলে তুলে নিয়ে দুগ্ধ দান করা।

যে সব কারণে নামায ভঙ্গ হয় না

নামাযরত থাকাবস্থায় নিম্নলিখিত কারণসমূহ পাওয়া গেলে নামায ভঙ্গ হবে না: (১) মানুষ কিংবা অন্য কোন প্রাণী নামাযের সামনে দিয়ে গেলে। (২) কোন কারণবশত নামাযে থাকাবস্থায় সামান্য সামনে বা পিছিয়ে গেলে। (৩) বেহেস্তের আশায় আনন্দিত হলে। (৪) দোযখের ভয়ে চুপে চুপে অনুতপ্ত হলে।

(৫) প্রয়োজন বশত কাশি বা হাঁচি দিলে। (৬) কোন লেখা দেখে তার অর্থ বুঝতে পারলে। (৭) নামাযের মধ্যে এমনভাবে ঘুমালে যাতে নামাযের কোনরূপ অঙ্গহানী হয় না। (৮) নামাযরত থাকা অবস্থায় সন্তানরা স্তনের দুধ খেতে চেষ্টা করলে। তবে স্তন খোলা হয়ে থাকলে নামায ভঙ্গ হয়ে যাবে। (শরহে বেকায়া)

যে সব কারণে নামায ছেড়ে দেয়া জায়েয

নামাযের নিয়্যত করার পরও এমন কতগুলো অবস্থা বা ঘটনা আছে, যে সব অবস্থার কোন একটি দেখা দিলে নামায ছেড়ে দেয়া জায়েয আছে। তবে পরবর্তী সময়ে এ নামায আদায় করে নিতে হবে।

(১) নামাযরত থাকাবস্থায় যদি হঠাৎ করে সাপ-বিচ্ছু কিংবা অন্য কোন হিংস্র জীব সামনে এসে পড়ে বা আক্রমণের ভয় থাকে। (২) চুলায় চড়ান ভাত-তরকারি পুড়ে নষ্ট হতে থাকলে তা রক্ষা করা জায়েয।

(৩) যানবাহন চলাচলের রাস্তায় মাল-পত্র রেখে নামায পড়াবস্থায় হঠাৎ করে যানবাহন এসে মালপত্র নষ্ট করার ভয় থাকলে। (৪) সাঁতার না জানা কোন লোক পানিতে পড়ে হাবুডুবু খেতে দেখলে। (৫) কোন অন্ধ লোক কুপে বা এরূপ কোন বিপদে পড়ে যাবার আশঙ্কা হলে।

(৬) পেশাব-পায়খানার বেগ বোশ হয়ে কাপড়-চোপড় নষ্ট হবার ভয় হলে। (৭) কোন ঘর-বাড় কিংবা কাপড়ে অগুন লাগলে। (জ) শৃগালে হাঁস-মুরগী ধরে নেয়ার সময় অন্য কেউ রক্ষা করার মত না থাকলে। (আলমগীরি)

নামায সম্পর্কিত কিছু মাসয়ালা

১। ইমাম সাহেব যথারীতি সিজদায় যাওয়ার সময় মুক্তাদি দৌড়ে এসে নিয়্যত বলতে বলতে এবং তাহরীমা বাঁধতে বাঁধতে সিজদাহ করলে উক্ত মুক্তাদীর নামায শুদ্ধ হবে না। কারণ নিয়্যত ও তাকবীরে তাহরীমা দাঁড়ানো অবস্থায় বাঁধা ফরয।

২। যে সব ফরয নামাযের পর সুন্নত বা নফল নামায আছে, উক্ত ফরয নামাযের পর গড়িমসি করে কিংবা দীর্ঘ মুনাজাত করে সময় নষ্ট করা এবং আছর ও ফজরের নামায ছাড়া ইমাম সাহেব মুক্তাদীগণের দিকে মুখ ফিরিয়ে বসে মুনাজাত করা মাকরূহ। (দুঃ মুখতার)
৩। ইমাম সাহেব ফজর এবং আছরের নামাযের পর মুক্তাদীগণের দিকে ফিরে বসে মুনাজাত করা মুস্তাহাব। (দুঃ মুখতার)

৪। দাঁড়ানোর জায়গা হতে সিজদাহ দেয়ার স্থান আধা হাতের চেয়ে বেশি উঁচু হলে নামায শুদ্ধ হবে না। যানবাহনে কিংবা কোন ওজর হলে ভিন্ন কথা।(দুঃ মুখতার)

৫। যদি ইমাম সাহেব তিনবার পর্যন্ত চেষ্টা করেও কোন সূরা বা কিরাআত শুদ্ধভাবে পড়তে না পারেন তখন মুক্তাদিগণের মধ্য হতে কেউ তা স্মরণ করিয়ে দেয়া জায়েয, তিনবারের আগে লোকমা না দেয়াই উত্তম। (দুঃ মুখতার)

৬। নামাযরত মুসল্লীর সামনে দিয়ে কোন লোক অতিক্রম করার সময় (মুখে কিছু না বলে) একটু হাতের ইশারায় নিষেধ করা জায়েয আছে। (দুঃ মুখতার)

৭। স্বাভাবিকতা কিংবা শালীনতা বিরোধী পোশাক পরে নামায পড়া মাকরূহে তাহরিমী। (দুঃ মুখতার)

৮। গরুর গাড়ি, ঘোড়ার গাড়ি, পালকি, উট ইত্যাদি প্রাণীর উপর আরোহিত অবস্থায় নামায পড়া জায়েয নয়। (ফঃ শামী)

৯। ট্রেন অথবা চলন্ত জাহাজ, নৌকা ইত্যাদি ঘুরে গেলে যদি কিবলার দিকে মুখ করার ব্যবস্থা না থাকা অবস্থায় নামায পড়া জায়েয নয়। (ফঃ শামী)

১০। সিজদাহ দেয়ার সময় যদি কপাল মাটিতে গিয়ে ঠেকে তাহলে পাগড়ীর পেঁচের উপরও সিজদাহ দেয়া জায়েয আছে। এভাবে গায়ের চাদর কিংবা অন্য কোন কাপড় উড়ে গিয়ে সিজদাহর স্থানে গিয়ে পড়লে তার ওপর সিজদাহ দেয়া জায়েয হবে। তবে উল্লিখিত শর্ত অনুযায়ী অবস্থা হলে তোষকের বেলায়ও তাই। (ফঃ শামী)

১১। ফজরের নামাযের ফরয আদায়ের জন্য জামা'আত আরম্ভ হয়ে গেলেও যদি দুরাকা'আত সুন্নত যথারীতি আদায় করে জামা'আতে শরীক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, এরূপ অবস্থায় সুন্নত আদায় করে নেয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু অন্যান্য নামাযে জামা'আত আরম্ভ হয়ে গেলে, জামা'আতে যোগ না দিয়ে সুন্নত বা নফল নামায পড়া মাকরূহ। (ফঃ শামী)

১২। জুমু'আ, ঈদ কিংবা হজ্জের খুতবা আরম্ভ হয়ে গেলে উক্ত সময়ে কোনরূপ সুন্নত বা নফল নামায পড়া মাকরূহ। (ফঃ শামী)

১৩। মহিলা-পুরুষ একই সাথে মিলে জামা'আতে নামায পড়া জায়েয নেই। তবে হ্যাঁ, যদি মহিলাদের জন্য পৃথকভাবে দাঁড়ানোর কোন ব্যবস্থা থাকে পর্দার সাথে মহিলারা পৃথক স্থানে থেকে জামা'আতে শরীক হতে পারে। স্বামী-স্ত্রী একই লাইনে কাছাকাছি দাঁড়িয়ে জামা'আতে নামায পড়লে কারও নামায হবে না। তবে হ্যাঁ, স্বামীর ইমামতিতে স্ত্রী এক লাইন পেছনে দাঁড়িয়ে নামায পড়লে দোষ নেই। (আলমগীরি)

১৪। নৌকা, জাহাজ, স্টীমার, রেলগাড়ি ইত্যাদি বাহন ঘাটে লাগান থাকুক কিংবা চলতি অবস্থায় ঐ সব বাহনসমূহে বসে বসে নামায পড়া দুরস্ত নেই। যদি দাঁড়িয়ে পড়ার মত কোন ব্যবস্থা না থাকে আর নামাযের সময়ও অতিবাহিত হয়ে যায়, এমতাবস্থায়ই কেবল বসে নামায আদায় করা জায়েয হবে। (আলমগীরি)

১৫। সূর্য উদয়-অস্ত যাওয়া এবং ঠিক দ্বিপ্রহরে ফরয, সুন্নত এবং ওয়াজিব, নফল কোন নামায পড়া জায়েয নেই, এমনকি জানাযার নামাযও নয়। তবে কোন অনিবার্য কারণে যদি আছরের নামাযের ওয়াক্ত শেষ হয়ে যাওয়ার মুহূর্তেই কেবল ঐ দিনের আছরের নামায পড়া জায়েয আছে, তবুও নামায ছেড়ে দেয়া যাবে না।
(আলমগীরি)

১৬। জাজিম, তোষক (চৌকি, খাটের উপর বিছানো বিছানাপত্র) ইত্যাদির উপর দাঁড়িয়ে নামায পড়া জায়েয নেই। জাজিমের উপর সিজদাহ দেয়া জায়েয নেই। তবে হ্যাঁ, যদি জাজিমের উপর হতে শক্ত স্থান পর্যন্ত নাক-কপাল পৌঁছান যায়,তাহলে দুরস্ত হবে। (মুনিয়া)

১৭। কোন লোক রুকুতে গিয়ে সিজদাহর তাসবীহ পাঠ করলেও নামাযের 'কোন ক্ষতি হবে না, এসব ক্ষেত্রে ভুল ধরা পড়লে শুদ্ধ করে নেয়া উত্তম। (মুনিয়া)

১৮। নামাযের মধ্যে মাথা হতে টুপি বা পাগড়ী পড়ে গেলে যদি সহজে এবং তাড়াতাড়ি লাগিয়ে দেয়ার সুবিধা থাকে তাহলে তড়িঘড়ি করে দিয়ে ফেলাই ভালো। এরূপ সুবিধা না থাকলে না দেয়াই ভালো। (মুনিয়া)

১৯। লাঠি কিংবা অন্য কোনকিছুর সাথে ঠেস দিয়ে নামায পড়া জায়েয নয়। তবে কোন নফল নামায হলে জায়েয হবে। (আলমগীরি)

২০। হস্তদ্বয়, পদদ্বয় ও কপাল দ্বারা সিজদাহ করা সুন্নত। পদদ্বয় ও কপাল দ্বারা সিজদাহ করা ফরয। সুতরাং সিজদাহ দেয়ার সময় পদদ্বয় মাটি হতে উঠিয়ে রাখলে নামাযই বাতিল হয়ে যাবে। (বেহেস্তী জেওর)

২১। তিন বা চার রাক'আত নামাযের প্রথম বৈঠকে বসে পুরা তাশাহ্হুদ দরূদসহ পড়ে ফেললেও তাকবীর বলে উঠে বাকি নামায আদায় করতে হবে। এরূপ অবস্থায় সাহু সিজদাহ দিতে হবে। (দুরঃ মুখতার)

২২। যদি ফজরের নামায পড়তে পড়তে সূর্য উঠে যায়, তাহলে সে নামায পুনরায় পড়তে হবে। কিন্তু আছরের নামায পড়তে পড়তে সূর্য অস্ত গেলে এ নামায পুনরায় পড়তে হবে না। (দুরঃ মুখতার)

২৩। ফজরের নামাযের জামা'আতে অংশগ্রহণের জন্য যদি পূর্বের সুন্নত দু'রাক'আত পড়তে না পারে তাহলে সূর্যোদয়ের পরে সে দুরাক'আত সুন্নত আদায় করা শরী'য়তের বিধান। কারণ ফজরের নামাযের পর সূর্যোদয়ের আগ পর্যন্ত কোন নামায পড়া শরী'য়তের আদেশ নেই। (শঃ বেকায়া)

২৪। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে ঘড়িহীন লোকেরা অনুমান করে আছরের নামায আউয়াল ওয়াক্তে ও মাগরিবের নামায শেষ ওয়াক্তে পড়াই উত্তম। (হেদায়া)

২৫। মাগরিবের নামায সব সময়ের জন্যই প্রথম ওয়াক্তে আদায় করা উত্তম। কেবলমাত্র রমজান মাসের জন্য ইফতারীর পর নামায আদায়ে কোন দোষ নেই। (হেদায়া)

২৬। এশার নামায মধ্যম সময়ে রাত ১০টার কাছাকাছি ঐ সব লোকদের জন্য পড়া উত্তম, যেসব লোকদের জন্য জামা'আতে নামায আদায়ের কোন সুযোগ নেই। (হেদায়া)

২৭। গ্রীষ্মকালে যোহরের নামায মধ্যম সময়ে এবং শীতকালে প্রথম সময়ে আদায় করা সর্বোত্তম। (হেদায়া)

২৮। নামায আদায় করার সময় হাত, হাঁটু বা কপালে ধূলা-বালি লেগে গেলে নামাযরত অবস্থায় সেগুলো ঝেড়ে ফেলা মাকরুহে তাহরীমী। (কাজীখান)

২৯। নামাযের নিয়্যত করার পর গরম লাগার কারণে গায়ে কিংবা সিজদাহর স্থানের ধূলা-বালি সরানোর জন্য ফুঁ দেয়া মাকরুহ। যদি এরূপ ফুঁকের আওয়াজ পার্শ্ববর্তী লোকের কানে যায়, তাহলে ঐ ব্যক্তির নামাযই বাতিল হয়ে যাবে। যেহেতু এ ধরনের ফুঁ দেয়া কথা বলার মধ্যে গণ্য। (কাজীখান)

৩০। কোন লোক যদি মাগরিবের নামাযে দাঁড়িয়ে ভুলে এশার নিয়্যত কিংবা যোহরের নামাযে দাঁড়িয়ে আছরের নিয়্যত করে ফেলে, তাহলে তার নামায শুদ্ধ-হবে। কারণ সময় এবং মানুষের অন্তরের নিয়্যতই মূলকথা। (আহকাম)

৩১। শীত-গ্রীষ্ম মৌসুমে আছরের নামায শেষ ওয়াক্তে অর্থাৎ সূর্য লাল হওয়ার আগে আদায় করা উত্তম। এ হুকুম তাদের জন্য প্রযোজ্য, যারা জামা'আতের সাথে নামায আদায় করতে পারেনি বা জামা'আতে উপস্থিত হতে পারেনি। আর জামা'আতের সাথে আউয়াল ওয়াক্তে নামায পড়াটাই সবচেয়ে বেশি ছাওয়াবের কাজ।

৩২। পুরুষদের জন্য ফজরের নামায সুবহে সাদিকের সময় আদায় না করে চতুর্দিকে ফর্সা হয়ে গেলে সূর্যোদয়ের কিছুক্ষণ পূর্বে আদায় করাই উত্তম। (হেদায়া)

৩৩। মহিলাদের জন্য ফজরের নামায সুবহে সাদিকের পর চতুর্দিক ফর্সা হওয়ার পূর্বেই আদায় করা উত্তম।

৩৪। রুকু হতে তাসমী' বলে সোজা হয়ে ধীর-স্থিরভাবে না দাঁড়িয়ে কেবল মোরগের ঠোকরের মত সামান্য একটু ঝুঁকি দিয়ে সিজদাহতে গেলে নামায শুদ্ধ হবে না।

৩৫। কোন লোকের যদি চার রাক'আত বিশিষ্ট ফরয নামায আদায়ে এমন ভুল হয় যে, শেষ বৈঠকের সময় না বসে উঠে যায় এবং পরে এ ভুলের কথা স্মরণ হয়, সে মুহূর্তে সাথে সাথে বসে গিয়ে তাশাহুদ পাঠ করে সাহু সিজদাহ্ দিবে এবং পুনরায় আত্তাহিয়্যাতু ও দরূদ শরীফ পাঠ করে সালাম ফিরায়ে নামায শেষ করবে।

আর যদি পঞ্চম রাক'আতে সিজদাহ দেয়ার পর খেয়াল হয়, নামায পাঁচ রাক'আত হয়েছে, তাহলে আরও এক রাক'আত পড়বে এবং শেষ বৈঠকে সাহু সিজদাহ করতে হবে। এমতাবস্থায় প্রথম চার রাক'আত ফরযের মধ্যে গণ্য হবে, আর পরবর্তী দুরাক'আত নফলের মধ্যে গণ্য হবে।

প্রকাশ থাকে যে, যদি এরূপ ঘটনা আছরের নামাযের মধ্যেও ঘটে থাকে তাহলেও ছ'রাক'আতই পুরা পড়তে হবে। আছরের নামাযের পর যদিও কোন নফল নামায পড়ার বিধান নেই, কিন্তু এ ক্ষেত্রে নফলের উদ্দেশ্যে নিয়্যত করা হয়নি।

আর যদি মাগরিবের নামাযে এরূপ ভুল হয় অর্থাৎ চতুর্থ রাক'আতের সিজদাহ দেয়ার পর ভুলের কথা স্মরণ হয়, এমতাবস্থায়ও এক রাক'আত নামায পড়ে মোট পাঁচ রাক'আত নামায পড়তে হবে। এভাবে ফজরের নামাযে ভুল হলে চার রাক'আত পুরা করতে হবে। মনে রাখবে, অতিরিক্ত রাক'আতটিতে সূরা ফাতিহার পর অন্য সূরা মিলায়ে পাঠ করে নিতে হবে। (দুঃ মুখতার, তাহাবী)

৩৬। যদি কোন লোকের এমন অবস্থা হয়, কত রাক'আত নামায পড়া হয়েছে - তা মনে নেই। এখন কি তাশাহুদ পড়তে হবে, না আরও এক রাক'আত পড়ে তাশাহুদ পড়তে হবে তা খেয়াল আসছে না। এরূপ অবস্থা হলে সে নামাযের নিয়‍্যত ছেড়ে দিয়ে নতুনভাবে নিয়্যত করে পুনরায় নামায আদায় করে নিতে হবে। (ফঃ শামী)

Post a Comment

0 Comments