কোরবানীর পশুর বিবরণ, কোরবানীর করার নিয়ম ও দোয়া, আকীকার বিবরণ

কোরবানীর পশুর বিবরণ, কুরবানীর পশু সম্পর্কীয় কতিপয় মাসায়িল, কোরবানীর বিবরণ, কুরবানীর পশুর বয়স, কুরবানীর মাসায়েল মাসিক আল কাউসার, পশু কোরবানি করা কি ফরজ, কুরবানী সম্পর্কে ফতোয়া, কুরবানির আধুনিক মাসআলা, কুরবানির পশুর শর্ত, কোরবানির পশু কেমন হওয়া উচিত, মাসায়েলে কুরবানী ও আকীকা pdf, কুরবানীর করার নিয়ম, কোরবানির পশুর বয়স, কোরবানির পশুর কান্না, kurbanir bidhan,

কোরবানীর পশুর বিবরণ, কোরবানীর করার নিয়ম ও দোয়া, আকীকার বিবরণ

কোরবানীর পশুর বিবরণ ও অংশীদার:
ছাগল ও ভেড়া এক বছর বয়সের, দুম্বা ছয় মাসের, গরু-মহিষ দু'বছরের, উট পাঁচ বছরের হতে হবে। মানত করলে কোরবানীর পশুর বয়সও উল্লিখিত রূপ হতে হবে। বকরী-ভেড়া যদি এক বছরের বয়সের কিছু কম হয় এবং দেখতে এক বছর বয়সের মত দেখায়, তবে তা দ্বারা কোরবানী করা দুরুস্ত হবে।

ছাগল, ভেড়া, দুম্বা একজনের নামেই একটি কোরবানী করতে হবে। গরু, মহিষ ও উট দিয়ে সাত জনে পর্যন্ত কোরবানী করা দুরুস্ত আছে। তবে, এক, তিন বা পাঁচ ছয় নামে কোরবানী করাও দুরুস্ত হবে। কোরবানীর পশুর সঙ্গে আকীকার অংশ দুরুস্ত।

কোরবানীর গোশতের তিন ভাগের একভাগ গরীবদেরকে এবং একভাগ আত্মীয়দেরকে দিবে, অবশিষ্ট নিজে রাখবে। এর ব্যতিক্রম করলে কোরবানীর মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়। তবে সংসারে লোকজন বেশি থাকলে বা মেহমান থাকলে নিজে বেশি রাখা দুরুস্ত আছে, কিন্তু গরীবদেরকে অবশ্যই কিছু অংশ দিতে হবে।

কোরবানীর চামড়ার সমুদয় টাকা গরীবদেরকে দান করে দিতে হবে। তবে চামড়া পাকা করে জায়নামায বানানো বা অন্য যেকোন কাজে ব্যবহার দুরুস্ত আছে। মানত করা কোরবানীর গোশত নিজেরা খাওয়া যাবে না এবং ধনীদেরকেও দেয়া যাবে না। সম্পূর্ণ গরীবদের মাঝে দান করে দিতে হবে।

কোরবানীর করার নিয়ম ও দোয়া

اللَّهُمَّ مِنْكَ وَإِلَيْكَ إِنَّ صَلُوتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَلَمِينَ - لَأَشَرِيكَ لَهُ وَبِذَلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَا أَوَّلُ الْمُسْلِمِينَ . اللَّهُمَّ تَقَبَّلْ هُذَا مِنْ فُلَانِ ابْنِ فُلَانٍ بِسْمِ اللهِ اللهُ أَكْبَرُ .

উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা মিনকা ওয়া ইলাইকা ইন্না ছলা-তী ওয়া নুসুকী ওয়া মাহইয়া-ইয়া ওয়া মামা-তী লিল্লা-হি রব্বিল 'আ-লামীন। লা-শারীকা লাহু ওয়া বিযা-লিকা উমিরতু ওয়া আনা আউয়ালুল মুসলিমীন। আল্লা-হুম্মা তাকাব্বাল হা-যা মিন ফোলানিবনি ফোলানিন, বিসমিল্লা-হি আল্লাহু আকবার।

ফোলানবিন ফোলানিন স্থলে কোরবানীদাতার নাম ও তার পিতার নাম উচ্চারণ করতে হবে। পশুর মাথা দক্ষিণ দিকে রেখে বাম কাতে কেবলামুখী শোয়াবে। ডান পা সিনার উপর রেখে কয়েকজনে ধরে রাখবে।

জবাইকারী দোয়া পড়ে বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলে ছুরি চালিয়ে জবাই করবে। ছুরি ধারালো হওয়া মুস্তাহাব। নিজে জবাই করতে অসমর্থ হলে অন্যকে দিয়েও কোরবানীর পশু জবাই করা যায়, তবে জবাই করার সময় কোরবানীর দাতার সম্মুখে উপস্থিত থাকা ভাল।

জবেহ করার সময়ে নিম্নের কাজগুলো করা ওয়াজিব

(১) পশুর মাথা যে জবাই করবে তার বাম দিকে এবং দেহ ডান দিকে রাখা,
(২) অস্ত্র ধারাল হওয়া, (৩) জবাইকারী ও সাহায্যকারী উভয়ে কেবলামুখী হওয়া,
(৪) জবাইর পূর্বে নিয়ত বা দোয়া পাঠ করা।

জবেহ করার সময়ে নিলিখিত কাজগুলো মাকরুহ

(১) অযূ না করে জবাই করা, (২) ছুরি ধারাল না হওয়া, (৩) পশুর মাথা উত্তর দিকে রাখা, (৪) নাপাক শরীরে জবাই করা, (৫) বিনা কারণে রাতে জবাই করা,

(৬) কেবলারোখ না হয়ে জবাই করা, (৭) পশুর মাথা আলাদা করে ফেলা, (৮) পশু ঠান্ডা হওয়ার পূর্বে চামড়া ছাড়ানো, (৯) পশুকে জবাইর স্থান থেকে হেঁচড়ে অন্যস্থানে টেনে নেয়া।

আকীকার বিবরণ

পুত্র সন্তান হলে দু'টি এবং কন্যা সন্তান হলে একটি বকরী বা খাসী কিংবা ভেড়া দিয়ে আকীকা দেয়া মুস্তাহাব। কেউ দু'টির বদলে একটি ছাগল দিয়ে পুত্র-সন্তানের আকীকা দেয়, তাতেও আকীকা আদায় হবে। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) হযরত ইমাম হোসাইন (রাঃ) এর আকীকা একটি বকরী দ্বারা করেছিলেন।

আকীকার পশুর বয়স কোরবানীর পশুর বয়সের অনুরূপ হতে হবে। যদি উল্লিখিত সময়ের মধ্যে কেউ আকীকা করতে অসমর্থ হয়, তবে পরে সুযোগমত যেকোন সময় করতে পারবে। আকীকার গোশত সকলেই খেতে পারে। চামড়া গরীবদেরকে বিলিয়ে দিতে হবে।

ভেড়া, বকরী, খাসী ছাড়া গরু, মহিষ দিয়েও আকীকা দুরুস্ত আছে। আর কোরবানীর অংশের সাথে আকীকার অংশ দেয়াও দুরুস্ত। গরু-মহিষের ক্ষেত্রে পুত্র সন্তানের জন্য দু'ভাগ এবং কন্যা সন্তানের জন্য এক ভাগ দিতে হয়। মাথা মুণ্ডনের পরে সন্তানের একটি ভাল নাম রাখতে হয়।

আকীকার দোয়া

اللَّهُمَّ هَذِهِ عَقِيقَةُ ابْنِي فُلَانٌ دَمُهَا بِدَمِهِ وَلَحْمُهَا بِلَحْمِهِ وَعَظْمُهَا بِعَظِيهِ وَجِلْدُهَا بِجِلْدِ، وَشَعْرُهَا بِشَعْرِه - اللَّهُمَّ اجْعَلْهَا فِدَاءَ الأَبْنِي مِنَ النَّارِ . بِسْمِ اللَّهِ الله اكبر .

উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা হা-যিহী আক্বীক্বাতা ইবনী ফোলানুন, দামু হা-বিদামিহী ওয়া লাহা-বিলাহমিহী ওয়া 'আযমুহা- বি'আযমিহী ওয়া জিলদুহা-বিজিলদিহী ওয়া শা'রুহা-বিশা'রিহী, আল্লা-হুম্মাজ'আলহা- ফিদা-আল লিইব্‌নী মিনান্না-রি। বিসমিল্লা-হি আল্লা-হু আকবার।

ফোলানিন এর জায়গায় ছেলে বা মেয়ে যার আকীকা দেয়া হচ্ছে তার নাম নিতে হবে।

Post a Comment

0 Comments